যদ্যপি আমার গুরুঃ আহমদ ছফা

রিভিউ লিখেছেনঃ মোহাম্মদ উল্লাহ ইমরান

'যদ্যপি আমার গুরু' এই বইটি মূলত চিন্তাবিদ ও লেখক আহমদ ছফার একটি সাক্ষাৎকার ধর্মী বই।এই বইয়ে তাঁর শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে তিনি যে বিভিন্ন সময়ে যেসব কথোপকথন করেছেন সেগুলো উঠে এসেছে।অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে জনাব আহমদ ছফার পরিচয় হয় মূলত পিএইচডি গবেষণার সুপারভাইজার হিসেবে।আহমদ ছফা উনাকে গিয়েছিলেন পিএইচডি গবেষণার সুপারভাইজার হওয়ার আবেদন নিয়ে।সেই থেকে শুরু করে তাঁর সাথে গভীর সম্পর্ক হয়ে যায়।এটাকে বই রিভিউ না বলে বলতে পারেন এটা আমার বই নোট।তাহলে চলুন বইটি নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।

যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি বাড়ি যায়

তথাপি তাহার নাম নিত্যানন্দ রায়।

মুখবন্ধ তে আহমদ ছফা লিখেন-

আমার স্বভাবটাই এমন, একজন মানুষ, তিনি যতো বড় ব্যক্তিত্বই হোন,বেশিদিন আমার আগ্রহ এবং কৌতুহল উদীপ্ত রাখতে পারেন না।অতি সহজেই তাঁরা পুরনো হয়ে যান।তখন তাঁদের ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আমার কোনো উপায় থাকে না।স্বভাবের এই একঝোঁকা প্রবণতাটির জন্য জীবনে আমি কম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হইনি।সাতাশ বছর ধরে রাজ্জাক স্যারের সান্নিধ্য লাভ করে আসছি, রাজ্জাক সাহেব আমার কাছে একদিনের জন্য ও পুরনো হয়ে যান নি।প্রতিবারই তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং জানাশোনার পরিধি আমার চোখে নতুন নতুন চমক সৃষ্টি করেছে।প্রথম দিন তাঁর সঙ্গে কথা বলে যেভাবে বিস্মিত হয়েছিলাম,এখনও একই ধরনের বিস্ময় তিনি আমার মধ্যে সৃষ্টি করেন।ভক্তি কিংবা শ্রদ্ধার প্রকাশ এ রচনায় কতটুকু ঘটেছে তা আমি জানিনে।বিস্ময়বোধের কারণেই স্যারের উপর এ রচনাটি লিখতে বাধ্য হয়েছি।

পৃষ্ঠা নং ১৩

প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে পরিচিত হওয়া আমার জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহের একটি। দৃষ্টিভংগির স্বচ্ছতা নির্মাণে, নিষ্কাম জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে, প্রচলিত জনমত উপেক্ষা করে নিজের বিশ্বাসের প্রতি স্থিত থাকার ব্যাপারে প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের মতো আমাকে অন্য কোনো জীবিত বা মৃত মানুষ অতোটা প্রভাবিত করতে পারেনি। প্রফেসর রাজ্জাকের সান্নিধ্যে আসতে পারার কারণে আমার ভাবনার পরিমন্ডল বিস্তৃততর হয়েছে, মানসজীবন ঋদ্ধ এবং সমৃদ্ধতরো হয়েছে।

২৬ নং পৃষ্ঠা

তিনি বললেন, প্রথম লাইব্রেরিতে ঢুইক্যাই আপনার টপিকের কাছাকাছি যে যে বই পাওন যায় পয়লা একচোটে পইড়া ফেলাইবেন।তারপর একটা সময় আইব আপনে নিজেই খুঁইজ্যা পাইবেন আপনের আগাইবার পথ।লেখার ব্যাপারটি অইল পুকুরে ঢিল ছোড়ার মতো ব্যপার। যতো বড় ঢিল যতো জোরে ছুড়বেন পাঠকের মনে তরংগটাও তত জোরে উঠব এবং অধিকক্ষণ থাকব।

আর পড়ার কাজটি অইল অন্য রকম।আপনে যখন মনে করলেন,কোনো বই পইড়্যা ফেলাইলেন, নিজেরে জিগাইবেন যে- বইটা পড়ছেন, নিজের ভাষায় বইটা আবার লিখতে পারবেন কি না।আপনের ভাষার জোর লেখকের মতো শক্তিশালী না অইতে পারে,আপনের শব্দভাণ্ডার সামান্য অইতে পারে, তথাপি যদি মনেমনে আসল জিনিসটা রিপ্রোডিউস না করবার পারেন,ধইর্যা নিবেন,আপনের পড়া অয় নাই।

"একটা কথা খেয়াল রাখন খুব দরকার। যখন একটা নতুন জায়গায় যাবেন, দুইটা বিষয় পয়লা জানার চেষ্টা করবেন। অই জায়গার মানুষ কি খায় আর পড়ালেখা কী করে। কাঁচাবাজারে যাইবেন কি খায় হেইডা দেহনের লাইগ্যা। আর বইয়ের দোকানে যাইবেন পড়াশোনা কি করে হেইডা জাননের লাইগ্যা।....কী খায় আর কী পড়ে এই দুইডা জিনিস না জানলে একটা জাতির কিছু জানন যায় না।"

পৃষ্ঠা নং ৫২

"ঢাকায় এসেছিলেন উইলসন সাহেব।উনার সাথে কথাবার্তা বলে জানতে পারেন সে বেশ লেখাপড়া জানেন।অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার জন্য অফার করেন।তখনই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মুয়াজ্জেম সাহেবের সাথে দেখা করে বলেন,"Here is an outstanding person,তাকে চাকরি দিলে ইউনিভার্সিটি উইল বি বেনিফিটেড।"মোয়াজ্জেম সাহেব তার চাকুরী দিতে রাজি অইলেন।আমি বললাম , আপনে দরখাস্ত করেন।দরখাস্ত করলেন।বাস চাকুরী অইয়া গেল।ছ'মাসের বেশি আছিলেন না।আমি এশিয়া অঞ্চলের প্রতি দৃষ্টি দেওনের জন্য ইনস্পায়ার করছিলাম।তিনি এই অঞ্চলে বিস্তর ঘোরাঘুরি করছেন। বইটা পড়লেই টের পাইবেন।স্যার বললেন, আরও একজন ইন্টারন্যাশনালি ফেমাস মানুষ আমাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন মাস্টারি করেছিলেন, সেই ভদ্রলোক ইংরেজ নন, ফ্রেন্স।তাঁর নাম ক্লদ লেভি স্ট্রস।"

৪২ নং পৃষ্ঠা

"কিছুদিন পরে ডিক উইলসন সাহেবের লেখা বৃহৎ কলেবরের গ্রন্থ 'এশিয়া এওয়েকস' প্রকাশিত হল।উইলসন সাহেব তাঁর গ্রন্থের উৎসর্গের বাক্যটা এভাবে লিখেছিলেন, 'টু আব্দুর রাজ্জাক অব ঢাকা, হু ব্রট ইস্ট ইন মাই মাইন্ড'। আজিজুল হক মন্তব্য করলেন,ডিক উইলসন সাহেবের গ্রন্থটি মানের দিক দিয়ে গুনার মিরডালের এশিয়ান ড্রামার কাছাকাছি। 'এশিয়ান ড্রামা'র জন্য গুনার মিরডালকে পরে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছিলো।তখনও আমি 'এশিয়ান ড্রামা' পড়িনি। কিছুদিনের মধ্যেই 'এশিয়ান ড্রামা' এবং 'এশিয়া এওয়েকস' দুটো বই পাশাপাশি পড়ার সুযোগ হলো।"

৫৩ নং পৃষ্ঠা

Lives of the English poets by Johnson স্যার বইটি বন্ধ করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,'ওহ ভেরি মাচ ওয়েল রিটেন।জনসন সাহেব ভীষণ প্রিসাইজ।বাংলা ভাষায় এইরকম একখান বই লিপিবদ্ধ হওয়া উচিত।'

Decline and fall of the Roman empire by Gibon সম্পর্কে বলেন,'গোড়ার দিকে রোমের যেসব মানুষ খ্রিস্টান অইছিল,তারা আছিল মস্টলি প্লিবিয়ান এন্ড পার্সিকিউটেড।একসময়ে তাগো সংখ্যা যখন বাইড়্যা গেল এম্পারার জাস্টিনিয়ান রাজ্যরক্ষার প্রয়োজনে নিজেই খ্রিস্টান অইয়া গেলেন।প্যালেস্টাইনের খ্রিস্টান ধর্ম আর রোমের খ্রিস্টান ধর্ম এক জিনিস নয়।রোমের প্যাট্রিসিয়ান এবং প্লিবিয়ান খ্রিস্টানের মধ্যবর্তী সাইকোলজিক্যাল ডিসট্যান্স অনেকদিন পর্যন্ত টিইক্যা আছিল।এই জিনিস আপনে বেংগলের মুসলমানদের মধ্যে ও পাইবেন।আশরাফ মুসলমান এবং আতরাফ মুসলমানদের মধ্যে আপনে খুব অল্পই কমন জিনিস খুঁইজ্যা পাইবেন।তবে মুসলমানদের আশরাফ বইন্যা যাইতে বেশি সময় লাগে না।দুধ ঘি ঠিকমতো খাইলেই এরিস্টোক্রেট বইন্যা যায়।'

৫৫ নং পৃষ্ঠা

"খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করার পর রোমের প্লিবিয়ান এবং পেট্রিসিয়ানদের নতুন একটা বিভাজন -রেখার সৃষ্টি হয়েছিল।এই ধরনের একটা প্রায় অলঙঘনীয় বিভাজন রেখা বেংগলের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যেও ক্রিয়াশীল রয়েছে।স্যারের এই কথার মধ্যে আমি একটা গভীর অন্তর্দৃষ্টির পরিচয় পেয়ে যাই।আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করি।সেই সময়ে জিয়াউর রহমান দেশের প্রেসিডেন্ট।আবুল ফজল ছিলেন জিয়া সাহেবের শিক্ষা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি আমাদের শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন এবং তাঁকে আমরা মান্য করতাম। একদিন সকালবেলা দেখতে পেলাম আবুল ফজল সাহেব মাথায় টুপি দিয়ে অপর এক উপদেষ্টা এম এ জি তাওয়াব সাহেবের সংগে রমনা রমনা ময়দানের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। আমি সালাম দিয়ে ফজল সাহেব কে জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় যাচ্ছেন।তিনি জানালেন, তাওয়াব সাহেবের সংগে সিরাতের মজলিসে যাবেন।আমি ভীষণ একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম। আবুল ফজল সাহেব নাস্তিকতা প্রচার করতেন।ক্ষমতার কাছাকাছি এসে দেখছি তিনিও নবীভক্ত হয়ে পড়েছেন।এই ঘটনাটি আমাকে প্রচন্ডভাবে আলোড়িত করে।রাজ্জাক স্যার রোমের প্লিবিয়ান খ্রিস্টানদের মনন মানসিকতার বিষয়ে যে ইংগিত করেছিলেন, আমার মনে হল,সেই দোলাচল মনোবৃত্তিটা বাঙালি মুসলমানের মনেও কাজ করে যাচ্ছে।মুসলিম রচিত পুঁথিসমুহের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বাঙালী মুসলমানের চৈতন্যের একটি দিক আমি উদঘাটন করতে চেষ্টা করেছিলাম।আমার রচনাটির শিরোনাম ছিল 'বাঙালী মুসলমানের মন'।লেখাটি মাসিক সমকালে প্রকাশিত হয়েছিল। লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পরপরই একটা তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়।আমি বাঙালি মুসলমানদের বেশিরভাগকেই হিন্দুদের বংশধর বলে মস্ত অপরাধ করেছি, এ অভিযোগ করে নানা পত্রপত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপা হতে থাকে।"

৫৫ নং পৃষ্ঠা

"সংস্কৃতির আরবি প্রতিশব্দ তমদ্দুন। তমদ্দুন শব্দটি এসেছে আরবি মদিনা থেকে। মদিনা শব্দের অর্থ অইল গিয়া শহর। ইসলামের লগে শহরের একটা বিশেষ সম্পর্ক আছে।আমি স্যারের মতামতটাকে যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারছিলাম না।তাই বললাম, এ বিষয়ে আমি বিশেষ জানি না।তথাপি আমার মনে হয় বেংগলের ক্ষেত্রে একথা বোধ করি সত্যি নয়। বেংগলের গ্রামেই মুসলমানের সংখ্যা বেশি।স্যার বললেন, সেকথা ঠিক, কিন্তু সূচনাটি অইছিল শহরে, গৌড়,পাণ্ডুয়া,সোনার গাঁ,ঢাকা,মুর্শিদাবাদ এর সবকটাই আছিল সিট অব পলিটিক্যাল পাওয়ার।"

৮৭ নং পৃষ্ঠা

"বংকিমের একটা ইনফিরিয়টি কমপ্লেক্স আছিল।তার পড়াশোনা অইছিল মুসলমানের টাকায়। মুহসিন ফান্ডের টাকায় তিনি লেখাপড়া করছিলেন। মুসলমানের বিরুদ্ধে কলম ধইর্যা সেই ঋণ শোধ করছিলেন।তারপর স্যার বললেন, রামকৃষ্ণ বংকিমরে দেইখ্যা কইছিলেন,তোমার মনে এত অহংকার কেন?

আমি বললাম, বিদ্যাসাগরের সঙ্গেও বংকিমের সাক্ষাতের এরকম একটি গল্প চালু আছে।বিদ্যাসাগর বিএ- তে বাংলার প্রশ্নপত্র তৈরি করেছিলেন এবং প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছিল, সে কারণে বংকিম কম নম্বর পেয়েছিলেন। তাঁকে গ্রেস মার্কস দিয়ে বিএ পাশ করতে হয়েছিল। একারণেই তিনি বিদ্যাসাগরের ওপর খাপ্পা ছিলেন।"

৯৩ নং পৃষ্ঠা

"যে জাতি যত সিভিলাইজড তার রান্নাবান্না ও তত বেশি সফিস্টিকেটেড। আমাগো ইস্টার্ন রান্নার সঙ্গে পশ্চিমাদের রান্নার কোনো তুলনা অয়না।অরা সভ্য অইছে কয়দিন।এই সেদিনও তারা মাছ মাংস কাঁচা খাইত।"

৯৪ নং পৃষ্ঠা

"বাংলা ভাষার মধ্যে যে পরিমাণ এলিট(elite) মাস(mass) গ্যাপ এইরকম দুনিয়ার অন্য কোনো ভাষার মধ্যে খুঁইজ্যা পাইবেন কি না সন্দেহ।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটা প্রধান অবদানের একটি হলো পাকিস্তান আন্দোলনের মনস্তাত্ত্বিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ভিতটি তৈরি করা।দ্বিতীয় অবদান বাংলা ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বদান এবং তৃতীয় অবদান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংকল্প ও কর্ম পন্থার দিকনির্দেশনা। এই জনগোষ্ঠীর জীবনে ওই তিনটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।কিন্তু জ্ঞানচর্চায় যে আরও একটা বৈশ্বিক মানদণ্ড রয়েছে তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান বিশেষ কিছুই নেই।

স্যার, সমাজতন্ত্রের কোন জিনিসটা আপনার ভালো লাগে? তিনি বললেন, কেমনে কই কোন জিনিস ভালা লাগে। তবে আমার একটা অভিজ্ঞতার কথা কইবার পারি। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পরে একজন রাশিয়ান আইছিল ঢাকায়। একসময় ভদ্রলােকের সঙ্গে আমার বেশ খাতির অইয়া গেল। একসময় তিনি আমাগাে লগে থাকতে আইলেন। হেই সময় আমি শান্তিনগর থাকতাম। একদিন দুপুরবেলা ইউনিভার্সিটি থেকে যখন বাড়িতে ফিরবার লইছি সেই ভদ্রলোক আমার লগে আছিল। তখন দুপুরবেলা। খুব গরম। রিকশার বদলির সময়। সহজে রিকশা পাওন যায় না। যেই চড়বার লইছি, সেই ভদ্রলােক আমার হাত ধইরা টাইন্যা নিয়া কইল, এইটাতে চড়ন যাইত না, দেখছেন না কেমন হাড়জিরজিইরা মানুষ! আমি যত রিকশা ঠিক করি, একটা একটা অছিলা বাইর কইরা বিদায় কইরা দেয়। হেইদিন বেবাক পথটা হাইট্যা বাড়ি ফিরতে অইছিল। মেহন্নতি মানুষের ওপর এই যে জাগ্রত সহানুভূতি আমার মনে অইছে এইডাই সমাজতন্ত্রের সবচাইতে বড় কন্ট্রিবিউশন।

সেক্যুলারিজম নিয়ে অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন,তৎকালীন ইউরোপে গীর্জার পাদ্রীদের অনেক ক্ষমতা ছিল। তারা মানুষকে বুঝাতো দুনিয়ার এই জীবন কিছুই নয়।সব কিছুর ফলাফল আমরা মৃত্যুর পরে পাবো।তাই আমাদেরকে ঐ জীবনের জন্য বেশি কাজ করতে হবে।তখনকার মানুষেরা ভাবলো শুধু আমরা যদি পরকালের জন্য সব কিছুই করি তাহলে দুনিয়াতে আমরা কি কিছুই করবো না? সেজন্য মানুষ বিগড়ে গেল।দুনিয়ার জন্য, দুনিয়ার জীবনে সুখী ও শান্তিময় করার জন্য ভোগ বিলাসের জন্য নেমে গেল।কিন্তু ইসলাম আমাদেরকে ভারসাম্য পূর্ণ জীবন যাপনের কথা বলে।ইসলাম নির্দেশ দেয় দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ।

বাংলাদেশের সব শ্রেণীর পাঠকের এই বই অবশ্য পাঠ্য বলে মনে করি।এই বইয়ের রিভিউ লিখতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে পাঠশালার সম্মানিত এডমিন জনাব শাহাদাত হোসেন স্যারের কথা, যার অনুপ্রেরণায় এই বই পড়ার জন্য বেশি উৎসাহিত হয়েছি।আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি উনাকে।

মোহাম্মদ উল্লাহ ইমরান

প্রবাসী বাংলাদেশী

Sylimran@gmail.com

০৭/১২/২০২০ ঈসায়ী

রোম,ইটালি।

বইটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন