ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
সাইয়েদ
আবুল আ’লা মওদূদী
[পুস্তিকাটি
মূলত মাওলানা মওদূদীর একটি ভাষণ। ১৯৪৫ সালের ২১ এপ্রিল পূর্ব পাঞ্জাবস্থ পাঠান
কোর্টের ‘দারুল ইসলামে’ নিখিল ভারত জামায়াতে ইসলামীর যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, সে সম্মেলনের সমাপ্তি অধিবেশনে
মাওলানা এ ভাষণটি প্রদান করেন।]
আপনারা জানেন, আমাদের ইসলামী আন্দোলনের সর্বশেষ ও
চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন। এই দুনিয়াতে আমরা যে লক্ষ্যে উপনীত
হতে চাই, তা এই
যে, মানব জীবনের সর্বক্ষেত্র
হতে ফাসেক, আল্লাহদ্রোহী
ও পাপীষ্ঠ লোকদের নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব
ও প্রাধান্য নির্মূল করে দিয়ে তদস্থলে আমরা সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করবো। এই
উদ্দেশ্যে চেষ্টা-সাধনা ও সংগ্রাম করাকে আমরা ইহকাল ও পরকাল সর্বত্রই আল্লাহর
সন্তোষলাভের একমাত্র উপায় বলে বিশ্বাস করি।
কিন্তু আমরা যে জিনিসকে নিজেদের চরম
উদ্দেশ্য হিসেবে নির্দিষ্ট করে নিয়েছি, বর্তমান মুসলিম অমুসলিম কেউই এর
গুরুত্ব সম্পর্কে পূর্ণরূপে সচেতন ও অবহিত নয়। মুসলমানগণ একে একটি রাজনৈতিক
উদ্দেশ্য মাত্র বলে মনে করে। দ্বীন ইসলামে এর গুরুত্ব যে কতোখানি, তা তারা মাত্র অনুধাবন করতে সমর্থ হয়
না। অমুসলিমগণ কিছুটা হিংসার বশবর্তী এবং অনেকটা অজ্ঞতাবশত মানব সমাজের মূলগত
সমস্যা সম্পর্কে একেবারেই অচেতন হয়ে আছে। এই দুনিয়ায় মানব সমাজের সকল দুঃখ-দুর্দশা
ও বিপদ-মুসিবতের মুলীভূত কারণ হচ্ছে মানুষের উপর ফাসেক আল্লাহদ্রোহী পাপী ও
অসৎলোকদের নেতৃত্ব। পৃথিবীর সর্বাধিক কাজ-কর্মের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব কেবলমাত্র সৎ
ও আল্লাহর অনুগত লোকদের হাতে ন্যস্ত হওয়ার উপরই মানবতার কল্যাণ একান্তভাবে নির্ভর
করে। কিন্তু বর্তমানে মানুষ এই কথা মাত্রই হৃদয়ংগম করতে পারছে না। আজ বিশ্বের মানব
সমাজে যে মহাবিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, অত্যাচার-জুলুম ও নির্যাতন-নিষ্পেষণের
স্বপ্লাবী সয়লাব বয়ে চলছে, মানব
চরিত্রে যে সর্বাত্মক ভাঙ্গন ও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, মানবীয় সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনীতির প্রতি রন্দ্রে
রন্দ্রে যে বিষ সংক্রমিত হয়েছে, পৃথিবীর যাবতীয় উপায়-উপাদান এবং মানব বুদ্ধির আবিস্কৃত
সমগ্র শক্তি ও যন্ত্র যেভাবে মানুষের কল্যাণ ও উন্নতি বিধানের পরিবর্তে ধ্বংস
সাধনের কাজে নিয়োজিত হচ্ছে এসবের জন্য মানব সমাজের বর্তমান নেতৃত্বই যে একমাত্র
দায়ী, তাতে আর কোনো সন্দেহ
থাকতে পারে না। দুনিয়াতে সৎ ও সত্য প্রিয় লোকদের কোনো অভাব নেই একথা ঠিক, কিন্তু দুনিয়ার যাবতীয় কাজ-কর্মের
কর্তৃত্ব এবং সমাজযন্ত্রের কোনো চাবিকাঠি তাদের হাতে নয়, এই স্বতঃসিদ্ধ। বরং বর্তমান দুনিয়ার
সর্বত্রই কর্তৃত্ব রয়েছে আল্লাহদ্রোহী, আল্লাহবিমুখ, জড়বাদী ও নৈতিক চরিত্রহীন লোকদের
মুষ্ঠিতে। এমতাবস্থায় যদি কেউ দুনিয়ার সংস্কার-সংশোধন করার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ
হয় এবং বিপর্যয়, উচ্ছৃংখলা, অশান্তি, অসচ্চরিত্রতা এবং অন্যায়কে পরিবর্তিত
করে শান্তি-শৃংখলা এবং সুসংবদ্ধতা-সচ্চরিত্রতা প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টানুবর্তী হয়, তবে পুণ্য ও সওয়াবের ওয়াজ আল্লাহর
বন্দেগী করার সদুপদেশ, সচ্চরিত্রতা, নির্মল নৈতিকতা গ্রহণের মৌখিক উৎসাহ
দেয়াই কখনো উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য যথেষ্ট হতে পারে না। বরং মনুষ্য জাতির মধ্যে সত্য
প্রিয়তা ও ন্যায়পন্থী যতো লোকই পাওয়া যাবে, তাদের একত্রিত ও সংঘবদ্ধ করে সমষ্টিগত
শক্তি অর্জন করা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব ফাসেক ও আল্লাহদ্রোহী
লোকদের হাত হতে কেড়ে সত্যপন্থী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকরী
পন্থা অবলম্বন করাই সংস্কারবাদী প্রত্যেকটি মানুষের পক্ষে অপরিহার্য কর্তব্য হয়ে
পড়ে।
নেতৃত্বের
গুরুত্ব
সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা দ্বীন ইসলামের মূল লক্ষ্য
নেতৃত্বের ব্যাপারে আল্লাহর নিয়ম
মানুষের উত্থান-পতন নৈতিক চরিত্রের উপর নির্ভরশীল
মৌলিক মানবীয় চরিত্রের বিশ্লেষণ
ইসলামী নৈতিকতা
নেতৃত্ব সম্পর্কে আল্লাহর নীতির সারকথা
মৌলিক মানবীয় চরিত্র ও ইসলামী নৈতিক শক্তির তারতম্য
ইসলামের নৈতিকতার চার পর্যায়ঃ ঈমান, ইসলাম, তাকওয়া, ইহসান
ভুল ধারণার অপনোদন
পুরো বই পড়ার জন্য অথবা ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা দ্বীন ইসলামের মূল লক্ষ্য
নেতৃত্বের ব্যাপারে আল্লাহর নিয়ম
মানুষের উত্থান-পতন নৈতিক চরিত্রের উপর নির্ভরশীল
মৌলিক মানবীয় চরিত্রের বিশ্লেষণ
ইসলামী নৈতিকতা
নেতৃত্ব সম্পর্কে আল্লাহর নীতির সারকথা
মৌলিক মানবীয় চরিত্র ও ইসলামী নৈতিক শক্তির তারতম্য
ইসলামের নৈতিকতার চার পর্যায়ঃ ঈমান, ইসলাম, তাকওয়া, ইহসান
ভুল ধারণার অপনোদন
পুরো বই পড়ার জন্য অথবা ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
0 Comments